হত্যা !!

একজন মানুষকে কেউ যখন হত্যা করে তখন কি তার হাত একটিবারের জন্যও কাঁপে না? আমার মত সাধারণ যেকোন মানুষ হলেই কাঁপার কথা। শুধুমাত্র মানসিকভাবে অসুস্থ (সাইকোপ্যাথ) হলে কারও পক্ষে অন্যকে ঠান্ডা মাথায় হত্যা করা সম্ভব। একবার চিন্তা করে দেখেন আপনি কাউকে দা দিয়ে কুপিয়ে মারছেন, বা গলা টিপে ধরছেন আর তার প্রাণশক্তি ধীরে ধীরে শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর কিছুক্ষণ পরে সে মরা লাশ। একবার শুধু এই দৃশ্যটি কল্পনা করেন। এই কাজ কি আপনার পক্ষে করা সম্ভব? আমরা তো স্বাভাবিক মৃত্যুতেও অনেক দুঃখ পাই।


তারপরও আমাদের দেশে একটার পর একটা এমন খুন হয়। কিছুদিন আগে একটা ভিডিও দেখলাম। চট্টগ্রামের একটা ইউনিভার্সিটির নবীন বরণ অনুষ্ঠানে কাকে প্রধান অতিথি করা হবে এই নিয়ে ছাত্রদের দুইটাগ্রুপের মধ্যে ঝামেলা হচ্ছে। একজন ছাত্রকে অন্যগ্রুপ ঘিরে ফেলেছে। তারপর সবাই একযোগে তাকে মারছে। এইসময় দূর থেকে একটি ছেলে ধীরে সুস্থে এগিয়ে আসল, পকেট থেকে একটা খুর বের করল এবং ঐ ছেলেটির গলা কেটে চলে গেল। শীতল একটা খুনের দৃশ্য।

এতটুকু মায়া মমতাও কাজ করে না এইসব খুনিদের মধ্যে। হয়ত, এদের অনুভূতি নষ্ট হয়ে গেছে। তাদের হয়ত কোন বোধ-শক্তি কাজ করেনা। হ্যা, যুদ্ধক্ষেত্র, দাঙ্গা-হাঙ্গামায় দুই পক্ষ মুখোমুখি হলে সেখানে অন্য ব্যপার। কারণ নিজেকে বাঁচাতেই তখন শত্রুকে ঘায়েল করতে হয়। কিন্তু একজন যেখানে নিরস্ত্র, তার কাছে কোন অস্ত্র নাই সেখানে তাকে খুন করা কি খুবই বীরত্বের ব্যপার। মোটেও না।

প্রশ্ন হল, আমাদের দেশে এই ধরণের ঘটনা বেশি ঘটে কেন? আর যারা এই ধরণের ঘটনা ঘটাচ্ছে তারা কি মানসিকভাবে সুস্থ। মানুষ এরকম জঘন্য কাজ কেন করে? তারমানে আমাদের দেশে কি সাইকোপ্যাথ অনেক বেশি, অন্য মানুষের অনুভুতি যাকে স্পর্শ করে না? হতে পারে। আমাদের সমাজ-সংস্কৃতি কি এর জন্য দায়ী? অন্যের প্রতি ঘৃণা কি এর জন্য দায়ী? এটি একটি কারণ হতে পারে। আমাদের সমাজে প্রত্যেক পদক্ষেপে অন্যকে ঘৃণা করা শেখানো হয়। কিন্তু ঘৃণা দিয়ে ভাল কিছু হয়না। আমাদের ভালবাসা শিখতে হবে। নিজের মত মানুষদের ভালবাসতে হবে। যারা আমাদের মত না তাদেরকেও ভালবাসতে হবে। একান্তই তাদেরকে ভালবাসা সম্ভব না হলে তাদেরকে তাদেরমত থাকতে দিতে হবে। কিন্তু কারও কথা পছন্দ না হলে তাকে খুন করে ফেলতে হবে এটা কোন কথা হল?

লেখাটি শেয়ার করুন

Share on FacebookTweet on TwitterPlus on Google+