প্লেনে যাত্রা করার সময় আমি সচরাচর আশেপাশের যাত্রীর সাথে কথা বলি না। কিন্তু এনাহাইম থেকে ডেনভার যাওয়ার পথে তার ব্যতিক্রম ঘটল।
এনাহাইমে কোন এয়ারপোর্ট নেই তাই প্লেন ধরতে যেতে হল লস এঞ্জেলেস এয়ারপোর্টে। ট্যাক্সিতে রওয়ানা দিলাম। প্রায় পয়তাল্লিশ মিনিটের রাস্তা। রাস্তায় একটা সি বীচ দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। ট্যাক্সি ছেড়ে দিলাম কিছুক্ষণ সমুদ্রের পাশে বসার জন্য।
এনাহাইমে কোন এয়ারপোর্ট নেই তাই প্লেন ধরতে যেতে হল লস এঞ্জেলেস এয়ারপোর্টে। ট্যাক্সিতে রওয়ানা দিলাম। প্রায় পয়তাল্লিশ মিনিটের রাস্তা। রাস্তায় একটা সি বীচ দেখে লোভ সামলাতে পারলাম না। ট্যাক্সি ছেড়ে দিলাম কিছুক্ষণ সমুদ্রের পাশে বসার জন্য।
ম্যানহাটন বীচ। নীল সমুদ্র দেখা যাচ্ছে। একটা রেস্টুরেন্টের বারান্দায় বসে
পরলাম। সমুদ্র দেখতে দেখতে লাঞ্ছটা সেরে ফেলা যাক। অর্ডার দিলাম গ্রিক
স্যুপ আর জাইরোস। খাওয়া শেষে আর একটা ট্যাক্সি ধরে এয়ারপোর্টে যাওয়ার জন্য
উঠে পরলাম।
ট্যাক্সি পেতে একটু বেগ পেতে হচ্ছিল। কারণ যে রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়েছিলাম তাদের ওয়াইফাই ইন্টারনেট কানেকশন নেই। বাধ্য হয়ে সাথের ব্যাগ ব্যাগেজ সহ হাটতে থাকলাম যদি একটা স্টারবাকস এর কফির দোকান পাওয়া যায়। কিছুদূর হাটতেই কফির দোকানটা পেয়ে গেলাম। ওদের ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করে উবারের ট্যাক্সি ডাকতে পারলাম অবশেষে।
যাইহোক এখন আসল কথায় আসি। প্লেনে উঠে বসতেই পাশের সিটের ছেলেটার সাথে বেশ খাতির হয়ে গেল। পরিচয় দিয়ে হ্যান্ডশেক করার পর আমি আর রুবিন যাত্রার প্রায় পুরোটা সময় কথা বললাম।
রুবিনই জিজ্ঞেস করল আমি কি করি। আমি বলার পর সে বলল তোমার কাজ তো দারুণ। এরপর আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কি করো। বলল, এইতো আমি ছোটখাট রকেট উড়াই।
মানে?
আমাদের কোম্পানি রকেটের ব্যবসা করে।
আমি বললাম, হুমম। এটা কোন কোম্পানি।
সে বলল, স্পেসএক্স।
বলো কি! আমি তো স্পেসএক্স এর অনেক বড় ফ্যান। তোমার দায়িত্বটা ঠিক কি?
রকেট ওড়ার পর থেকে কক্ষপথে যাওয়া পর্যন্ত আমার কাজ।
ডেনভারে কি করতে যাচ্ছ?
ছুটি কাটাতে। ওখানে গিয়ে স্কি করব।
তারপর আরো অনেক কথা হল। জানতে পারলাম। রুবিনের বাবার একটা কোম্পানি আছে যেখানে প্লেন চালানো শেখায়। ছোটবেলাতেই রুবিন প্লেন চালানো শেখে। সাথে সাথে কিভাবে প্লেন সারাতে হয় তার শিক্ষা পায়। এরপর পড়াশুনা শেষে স্পেসএক্স এ জয়েন করে। লস এঞ্জেলেস থেকে মোটরবাইকে করে অফিসে যাতায়াত করে।
আমি ওকে বলমাম, এই ছোট জীবনেই তুমি এমন অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করেছ যার উপর মানুষের জীবন নির্ভর করে। আগে প্লেন চালাতে। এখন রকেট ওড়ানোর দায়িত্ব তোমার। এই সব করতে তোমার নার্ভাস লাগে না? ও বলল, এই সব কাজ করতে গিয়ে আমি উপলব্ধি করেছি জীবন চলে যেতে এক সেকেন্ডও সময় লাগেনা। আর এই উপলব্ধি আমাকে জীবনের প্রতি বিনয়ী করে তুলেছে। আমি জানি প্রত্যেকটা মুহূর্ত কত মূল্যবান। তাই আমি প্রত্যেকটা মুহূর্তের জন্য বাঁচি। প্রত্যেকটা মুহূর্তকে মূল্যবান করার চেষ্টা করি।
এরপর ও আমাকে ওর সাথে থাকা বিজ্ঞানের একটা বই দেখাল। বইটার নাম সায়েন্সিয়া, উডেন বুক সিরিজের একটা বই। আমরা অনেকক্ষন ছবির মাধ্যমে কিভাবে গণিত সমাধান করা যায় সেটা আলোচনা করলাম। এরপর ও আমাকে ওর স্কেচবুক দেখাল। যেখানেই যায় স্মৃতিপূর্ন জিনিসগুলো স্কেচ করে রাখে। যেমন - এক পৃষ্ঠায় একটা পানীয়ের বোতলের স্কেচ আর একটা পৃষ্ঠায় অন্য কিছুর স্কেচ, এরকম। সাথে স্কেচের তারিখ।
আলাপের এক পর্যায়ে ওকে বললাম, কনফারেন্সের ফাঁকে আমারও স্কি করার ইচ্ছা আছে। শুনে ও আমাকে স্কি বিষয়ক কিছু টিপস দিয়ে দিল।
এত আলাপচারিতায় আমার উপলবব্ধি, আমেরিকা সফরে আমার সাথে পরিচিত হওয়া সবচেয়ে ইনারেস্টিং ব্যক্তি রুবিন।
মঞ্জিলুর রহমান
লারামি, উইওমিং, যুক্তরাষ্ট্র।
ট্যাক্সি পেতে একটু বেগ পেতে হচ্ছিল। কারণ যে রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়েছিলাম তাদের ওয়াইফাই ইন্টারনেট কানেকশন নেই। বাধ্য হয়ে সাথের ব্যাগ ব্যাগেজ সহ হাটতে থাকলাম যদি একটা স্টারবাকস এর কফির দোকান পাওয়া যায়। কিছুদূর হাটতেই কফির দোকানটা পেয়ে গেলাম। ওদের ফ্রি ওয়াইফাই ব্যবহার করে উবারের ট্যাক্সি ডাকতে পারলাম অবশেষে।
যাইহোক এখন আসল কথায় আসি। প্লেনে উঠে বসতেই পাশের সিটের ছেলেটার সাথে বেশ খাতির হয়ে গেল। পরিচয় দিয়ে হ্যান্ডশেক করার পর আমি আর রুবিন যাত্রার প্রায় পুরোটা সময় কথা বললাম।
রুবিনই জিজ্ঞেস করল আমি কি করি। আমি বলার পর সে বলল তোমার কাজ তো দারুণ। এরপর আমি ওকে জিজ্ঞেস করলাম তুমি কি করো। বলল, এইতো আমি ছোটখাট রকেট উড়াই।
মানে?
আমাদের কোম্পানি রকেটের ব্যবসা করে।
আমি বললাম, হুমম। এটা কোন কোম্পানি।
সে বলল, স্পেসএক্স।
বলো কি! আমি তো স্পেসএক্স এর অনেক বড় ফ্যান। তোমার দায়িত্বটা ঠিক কি?
রকেট ওড়ার পর থেকে কক্ষপথে যাওয়া পর্যন্ত আমার কাজ।
ডেনভারে কি করতে যাচ্ছ?
ছুটি কাটাতে। ওখানে গিয়ে স্কি করব।
তারপর আরো অনেক কথা হল। জানতে পারলাম। রুবিনের বাবার একটা কোম্পানি আছে যেখানে প্লেন চালানো শেখায়। ছোটবেলাতেই রুবিন প্লেন চালানো শেখে। সাথে সাথে কিভাবে প্লেন সারাতে হয় তার শিক্ষা পায়। এরপর পড়াশুনা শেষে স্পেসএক্স এ জয়েন করে। লস এঞ্জেলেস থেকে মোটরবাইকে করে অফিসে যাতায়াত করে।
আমি ওকে বলমাম, এই ছোট জীবনেই তুমি এমন অনেক বড় বড় দায়িত্ব পালন করেছ যার উপর মানুষের জীবন নির্ভর করে। আগে প্লেন চালাতে। এখন রকেট ওড়ানোর দায়িত্ব তোমার। এই সব করতে তোমার নার্ভাস লাগে না? ও বলল, এই সব কাজ করতে গিয়ে আমি উপলব্ধি করেছি জীবন চলে যেতে এক সেকেন্ডও সময় লাগেনা। আর এই উপলব্ধি আমাকে জীবনের প্রতি বিনয়ী করে তুলেছে। আমি জানি প্রত্যেকটা মুহূর্ত কত মূল্যবান। তাই আমি প্রত্যেকটা মুহূর্তের জন্য বাঁচি। প্রত্যেকটা মুহূর্তকে মূল্যবান করার চেষ্টা করি।
এরপর ও আমাকে ওর সাথে থাকা বিজ্ঞানের একটা বই দেখাল। বইটার নাম সায়েন্সিয়া, উডেন বুক সিরিজের একটা বই। আমরা অনেকক্ষন ছবির মাধ্যমে কিভাবে গণিত সমাধান করা যায় সেটা আলোচনা করলাম। এরপর ও আমাকে ওর স্কেচবুক দেখাল। যেখানেই যায় স্মৃতিপূর্ন জিনিসগুলো স্কেচ করে রাখে। যেমন - এক পৃষ্ঠায় একটা পানীয়ের বোতলের স্কেচ আর একটা পৃষ্ঠায় অন্য কিছুর স্কেচ, এরকম। সাথে স্কেচের তারিখ।
আলাপের এক পর্যায়ে ওকে বললাম, কনফারেন্সের ফাঁকে আমারও স্কি করার ইচ্ছা আছে। শুনে ও আমাকে স্কি বিষয়ক কিছু টিপস দিয়ে দিল।
এত আলাপচারিতায় আমার উপলবব্ধি, আমেরিকা সফরে আমার সাথে পরিচিত হওয়া সবচেয়ে ইনারেস্টিং ব্যক্তি রুবিন।
মঞ্জিলুর রহমান
লারামি, উইওমিং, যুক্তরাষ্ট্র।