বিসিএস অভিজ্ঞতাঃ ভাইভা প্রস্তুতি

এর আগের পোস্টে আমি লিখেছিলাম কিভাবে আমি সম-সাময়িক ইন্টারভিউ থেকে অভিজ্ঞতা নিয়ে নিজেকে বিসিএস ভাইভার জন্য প্রস্তুত করেছি। এবার বিসিএসের ভাইভার বর্ণণা লিখব।

আমার ভাইভা ছিল ২০১৬ সালের ১৬ই ফেব্রুয়ারী। ভাইভা দিতে লন্ডন থেকে ঢাকায় এসেছিলাম এর কয়েকদিন আগে। তখনও জেটল্যাগ ছিল। অর্থাৎ, দিনের প্রায় বেলা দুইটা পর্যন্ত চোখে ঘুম লেগে থাকত কারণ ব্রিটেনে সেই সময় রাত। নতুন জায়গার দিনরাতের টাইমিং অনুযায়ী ঘুমের সময় ঠিক হতে বেশ কয়েকদিন লাগে। ভাইভার সকালে চোখ ঘুম নিয়েই পিএসসি অফিসের দিকে রওয়ানা হলাম।

পরনে ছিল একটা চেক শার্ট, অফ-হোয়াইট স্যুট আর ঢাকা ইউনিভার্সিটির কনভোকশনের টাই (এই টাইটা আমি প্রায়ই পরি যদিও দেশে গিয়ে ইদানীং কিবল কলেজের টাই পরা শুরু করেছি)। ভাইভা শুরুর আধা ঘন্টা আগে পিএসসির অফিসে পৌছালাম। গেট বন্ধ ছিল। গেটের সামনেই এক লোক খাম বিক্রি করছে দেখে আমি তার কাছ থেকে একটা খাম কিনে খামের উপর নিজের নাম ও রেজিস্ট্রেশন নম্বর লিখলাম।

এরপর গেট খুলে দিলে ভিতরে ঢুকে গেলাম। রেজিস্ট্রশন নম্বর অনুযায়ী কার কোন বোর্ড পরেছে সেটা লটারী করে ঠিক করা হল। এরপর সবাইকে তাদের বোর্ডের জন্য নির্ধারিত রুমে নিয়ে যাওয়া হল। প্রথমেই আমাদের কাগজপত্র জমা নিয়ে নেওয়া হল। আর আমরা অপেক্ষা করতে থাকলাম।
যেকোন প্রার্থী ভাইভার রুমে ঢোকার আগেই তাঁর কাগজপত্র ভাইভা বোর্ডের কাছে পাঠানো হয়। ফলে তারা কিছুক্ষণ ধরে প্রার্থীর বিষয়ে ধারণা নেন।

অপেক্ষা করতে করতে জেট ল্যাগের কারণে তন্দ্রা লেগে গিয়েছিল। প্রায় ঘুমিয়ে পরব এমন সময় ভাইভার জন্য আমার ডাক পরল। আমি নিজের সাথে আনা পানির বোতল থেকে পানি খেয়ে ভিতরে ঢুকে গেলাম। নিজেকে যতটা সম্ভব চনমনে রাখলাম।

সঙ্গত কারণেই আমি কোন ভাইভা বোর্ডে পরীক্ষা দিয়েছি না এখানে লিখছি না।

রুমের দরজা খুলেই আমি বললাম, ভেতরে আসতে পারি? অনুমতি পেয়ে ভিতরে ঢুকে সালাম দিলাম। এরপর বললাম টেবিলের কাছে গিয়ে বললাম, বসতে পারি? আমাকে বসতে বললে বসে পড়লাম।
ভাইভা বোর্ডে তিনজন ছিলেন। বোর্ড প্রধান, প্রথম সদস্য ও দ্বিতীয় সদস্য।

বোর্ড প্রধানঃ তোমার রেজাল্ট তো অনেক ভাল।

আমিঃ হাসি দিলাম।

বোর্ড প্রধানঃ তুমি এখন কি কর?

আমিঃ পড়াশুনা করছি।

বোর্ড প্রধানঃ কোথায়?

আমিঃ অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটিতে।

বোর্ড প্রধানঃ তোমার রেজাল্ট এত ভাল। ঢাকা ইউনিভার্সিটির জেনেটিক ইঞ্জিনিয়াং এ পরেছ। এখন অক্সফোর্ডে মাস্টার্স করব। আমরা তো চাই তুমি সায়েন্স লাইনে যাও। কিন্তু তুমি চাও? তোমার পরিবার কি চায়?

আমিঃ আমি আসলে এমন কিছু করতে চাই যাতে দেশের ও দেশের মানুষের উন্নতি হয়। আমার পরিবার চায় আমি সিভিল সার্ভিস করি। আমি নিজেও সিভিল সার্ভিস করতে চাই।

প্রথম সদস্যঃ Why do you want to come to civil service?

আমিঃ As I said previusly, I believe in a life that can the live of others. That's why I want to do something that will change the life of a larger number of people. In Bangladesh, civil service provides opportunity to do so. As a result, I want to join civil service.
প্রথম সদস্যঃ So you study in the UK? Can you tell us what is the difference between civil service in the UK and that in Bangladesh?

আমিঃ I don't exactly know the difference between them. However, from my experience, I came across having to deal with governence in the UK a number of times, and I found that they organized differently. For example, many of their services depends on IT and the service itself is provided by a private company. Govt. outsource most of their jobs. The job of govt officials' is to ensure the comapny is providing the service properly. So, the job is more of a leadership and supervising role than actually being involved in the process. Whereas, in Bangladesh govt officials' are involved directly to provide service to the people.

প্রথম সদস্য আর একটা প্রশ্ন করেছিলেন যেটা ভুলে গেছি।

দ্বিতীয় সদস্যঃ তোমার হোম ডিস্ট্রিক্ট কোথায়?

আমি উত্তর দিলাম।

দ্বিতীয় সদস্যঃ তারমানে তুমি রংপুর বিভাগের। আচ্ছা বলতো রংপুর বিভাগ কবে হয়েছে?

আমিঃ খুব রিসেন্টলি হয়েছে।

দ্বিতীয় সদস্যঃ সাল বলতে পারবা?

আমি আন্দাজে একটা সাল বললাম। উনি বললেন, তারিখ বললে পারবা?

আমি বললাম, না পারব না স্যার। স্যরি।

দ্বিতীয় সদস্যঃ Please tell us something about the liberation war.

আমিঃ Liberation war is the most important historic event in our national life. It is the source of all the phylosophical and political backgroud of Bangladeshi nationalism. When I read back the stories about the war, I can not believe them. It is one of the worst genocides in the world's history. It was not even a war. The war was imposed on us and fortunately we could fight back. Thanks to the great leadership during the liberation war. But the spirit of the war still remains. We have to keep fighting for the values of the liberation war. We have to try our best to uphold the dreams of the people who sacrified everything for us.

দ্বিতীয় সদস্যঃ আমাকে থামিয়ে দিয়ে। Thank you. Thank you very much for coming here.

এরপরের কথোপকথন বেশ ব্যক্তিগত ছিল। সেগুলো জেনে কারও লাভ হবে না। তাই এখানে লিখলাম না।

শেষে বোর্ড প্রধান বললেন, আমরা আশা করি তুমি দেশের জন্য অনেক কিছু করবা।

আমি ওনাদের কাছে দোয়া চেয়ে এবং সালাম দিয়ে বের হয়ে আসলাম।

উল্লেখ্য, আমি একটা ডকুমেন্ট কম নিয়ে গিয়েছিলাম। ভাইভা শেষে বের হয়ে এসে ডকুমেন্টটা নিয়ে আবার দিয়ে আসি।

মঞ্জিলুর রহমান
সামরাটাউন, অক্সফোর্ড

লেখাটি শেয়ার করুন

Share on FacebookTweet on TwitterPlus on Google+