বার্লিনে প্রথমবার

১। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকতে একবার শখ করে জার্মান ভাষা শেখা শুরু করলাম। বিকেলে আন্তর্জাতিক ভাষা শিক্ষা অনুষদে ক্লাস হত। কিছুদিনের মধ্যে বেশ কিছু শব্দ আর বাক্য বলা শিখে গিয়েছিলাম। এরপর ডিপার্টমেন্টের ক্লাস আর পরীক্ষার চাপে জার্মান ভাষা শেখা চালিয়ে যেতে পারিনি।


ব্রিটেনে এসে অনেক জার্মানের সাথে বন্ধুত্ব হয়েছে। তবে তারা ইংরেজীতে খুব ভাল। কখনও তাদের সাথে জার্মান ভাষায় কথা হয়নি।

জার্মান নিয়ে এত কথা বলার কারণ হল আগামী মাসে জার্মানী যাচ্ছি। বার্লিনে একটা আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে। এটা হল ফেডারেশন অফ ইউরোপিয়ান নিউরোসায়েন্স সোসাইটিস (সংক্ষেপে ফেন্স) এর সম্মেলন। এবার তাই কিছুদিনের জন্য হলেও হয়ত জার্মান ভাষাটা ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাব।

গত সপ্তাহে সেনগেন ভিসা হাতে পেয়েছি। বাংলাদেশী বলে পৃথিবীর প্রায় সব দেশে যেতেই আমাদের ভিসা লাগে। অন্য অনেক জাতির লাগে না।

সেনগেন ভিসার প্রসেসটাও বেশ ঝামেলার। তিন মাসের বেশি বিজনেস ভিসা দেয়না। তবে আগষ্টে পর্তুগাল যাওয়ার সময় একই ভিসায় কাজ হয়ে যাবে বলে তত বেশি বিরক্ত হচ্ছি না। দুই দুইবার ভিসার ঝামেলা তো আর করতে হচ্ছে না।

- অক্সফোর্ড, যুক্তরাজ্য

২। জার্মান ভাষায় বেলজিয়ামকে বলে বেলগিয়েন আর ব্রাজিলকে বলে ব্রাজিলিয়েন।

- ব্রান্ডেনবুর্গ, বার্লিন, জার্মানি

৩। বার্লিনে আসার পর সব জায়গায় জার্মান বলার চেষ্টা করতেছি।

খাবারের দোকানে গিয়ে জার্মান দিয়েই শুরু করি। কিন্তু আমার জার্মান তত ভাল না। তাই একটুতেই আটকে যাই। আর জার্মানরা আমার কষ্ট দেখে ইংরেজিতেই কথা বলা শুরু করে। এরা ইংরেজিতে অনেক ভাল।

তবে গতকাল রাতের খাবার খেতে গিয়ে পুরো কাজ জার্মানে সারতে পারলাম অবশেষে।

আমি: হালো। ইস মোয়েস্টে আইন ... উন্ড আইন ...
হিয়ার এজেন ওডার ভাগনেহমেন?
আমি বললাম, হিয়ার।
তারপর দাম দিতে বলল। ফুনফ অয়রো উন্ড আখটছিস। দাম দিলাম।
এরপর ও আরো কিছু বলল। আমি বুঝলাম বসতে বলেছে। আমি তাকে ডানকে বলে বসে গেলাম।

ডানকে মানে ধন্যবাদ।

আজকে সকালে কফি সপে এসে কফি অর্ডার করার সময় আবার জার্মান ট্রাই করলাম। এবার কাজ হলোনা। আমার ভাঙা উচ্চারণ দেখে কফি সপের মেয়েটা ইংরেজিতে বাকি কথা বলে গেল। আমি জার্মান না পারার মনোকষ্ট নিয়ে বসে বসে কফি খাচ্ছি আর এই পোস্ট লিখছি।

- শারলোটেনবুর্গ, বার্লিন, জার্মানি

লেখাটি শেয়ার করুন

Share on FacebookTweet on TwitterPlus on Google+