আগের পর্ব
এভিডিয়ানরা বেশ কয়েক প্রজম্ন ধরে নিজেদের অনুলিপি তৈরি করে করে যাচ্ছিল। যদিও অনুলিপিকরণ একেবারে নির্ভুল হল না। তারপরও এতে ভুল এত সামান্যই হল যে তা দৃষ্টি এড়িয়ে গেল। তাদের মিউটেশন হচ্ছিল আসলে। এই সামান্য মিউটেশনের গুরুত্ব প্রথমে উপলব্ধি করেনি কেউ।এভাবে কয়েক চক্র পরে হঠাত দারুণ কিছুর দেখা মেলে। এভাবে চলতে চলতে এদের ১০,০০০ তম উত্তরাধিকারীর মধ্যে উদ্ভব হবে স্মৃতির।
এই হল এভিডিয়ানদের জগত। এই জগতের সৃষ্টিকর্তা হলেন মিশিগান স্টেট ইউনিভার্সিটির চার্লস ওফ্রিয়া ও তার সঙ্গীগণ। তারা একটি ডিজিটাল জগত তৈরি করলেন কম্পিউটারে যার নাম "এভিডা"।
এভিডা জগতের বাসিন্দাদের বলা হল এভিডিয়ান। ডিএনএর জায়গায় তাদের রেপ্লিকেশন হয় কম্পিউটারে কোডকৃত স্ট্রিং এর মাধ্যমে। কিন্তু বিভিন্ন ভাবেই তারা অনেকটা জীবের মত। যেমন- তারা একে অপরের সাথে প্রতিযোগিতা করে, তাদের রেপ্লিকেশন হয়, মিউটেশন ঘটে এবং ঘটে বিবর্তনও।
"কিন্তু কিভাতে এদের বিবর্তনে সৃষ্টি হবে বুদ্ধিমত্তার?” এই পশ্নের উত্তর মিলবে যদি আমারা বুঝতে পারি প্রকৃতিতে কিভাবে বুদ্ধিমত্তার উদ্ভব হয়েছে। জানতে হবে বুদ্ধিমত্তার জন্য কি কি বিষয় জীবকে অর্জন করতে হয়। এক্ষেত্রে অন্যতম প্রয়োজনীয় যে জিনিসটি তা হল স্মৃতি। স্মৃতি ছাড়া বুদ্ধিমত্তা অসম্ভব।
শুরুতে এভিডা জগতে ছেড়ে দেয়া হল সম্ভবপর সরলতম জীব- যেটা শুধু নিজেকে ক্লোন বা কপি করতে পারে মানে একধরণের প্রজনন ক্ষমতা আছে। এরপর বিবর্তন ঘটানোর চেষ্টা।বিবর্তনের পিছনের একটে বড় কারণ হল ন্যাচারাল সিলেকসন। মানে একাধিক জীবের মধ্যে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে এমন জীবের টিকে থাকা যারা অন্যদের চেয়ে বেশি ফিট। এভিডিয়ান জগতেও তাই প্রতিযোগিতার পরিবেশ স্টৃষ্টি করা হল, যে প্রতিযোগিতার পুরষ্কার হল খাবার।
এ প্রতিযোগিতায় যে যত বেশি খারার জিততে পারবে, সে নিজের তত বেশি কপি তৈরি করবে। ফলাফল ওই বিশেষ ধরণের এভিডিয়ানের আধিক্য।
এভিডা জগতে জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বৈশিষ্ট অর্জিত হলঃ প্রজনন, মিউটেশন, ন্যাচারাল সিলেকসন এবং বিবর্তন।
(চলবে...)
পরের পোস্টে এগুলো নিয়ে আরও আলোকপাত করা হবে।
সুত্রঃ নিউ সায়েস্টিস্ট উইকলিতে (আগষ্ট ২০১০ ইস্যু) প্রকাশিত একটি প্রবন্ধ অবলম্বনে।
মঞ্জিলুর রহমানের ডায়েরী
কম্পিউটার
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা
বিজ্ঞান
বিবর্তন
মস্তিষ্ক
ভার্চুয়াল জগতে প্রাণ-২ : এভিডিয়ানদের জগত