আমরা খুবই ইমোশনাল জাতি। তাই নিজেদের যেটা ভাল লাগে সেটাকে ঠিক বলি। আর
যেটা ভাল লাগে না সেটাকে খারাপ বলি। কিন্তু ইমোশন দিয়ে সবকিছু চলে না।
বিশেষ করে আইন-আদালত তো নয়ই।
কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীর বিরুদ্ধে দেয়া রায়ে আদালতকে যথেষ্ঠ আবেগপূর্ণ মনে হয়েছে। সাথে সাথে আমরা জনগণও আবেগের বশোবর্তী হয়ে একে অপরকে গালাগালি করে যাচ্ছি।
সেটা না করে আমরা যদি রায়ের মূল অংশ ও এর সাথে জড়িত আইনগুলো একটু পড়ে দেখি তাহলে অন্তত যুক্তিযুক্ত কথা বলতে পারব।
কিন্তু ষোড়শ সংশোধনীর বিরুদ্ধে দেয়া রায়ে আদালতকে যথেষ্ঠ আবেগপূর্ণ মনে হয়েছে। সাথে সাথে আমরা জনগণও আবেগের বশোবর্তী হয়ে একে অপরকে গালাগালি করে যাচ্ছি।
সেটা না করে আমরা যদি রায়ের মূল অংশ ও এর সাথে জড়িত আইনগুলো একটু পড়ে দেখি তাহলে অন্তত যুক্তিযুক্ত কথা বলতে পারব।
এখানে, আমি প্রথমে ষোড়শ সংশোধনী, তারপর এই সংশোধনীর বিরুদ্ধে দেওয়া রায়
এবং আদালত সংবিধানের যে ধারার সাথে ষোড়শ সংশোধনীকে সাংঘর্নিক ঘোষণা করেছে
তা তুলে ধরছি।
আশা করি জেনে কথা বললে সব পক্ষের মধ্যে চলমান বিরোধ কিছুটা কমবে।
------------------------------------------------------------
ষোড়শ সংশধনী (সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ)
৯৬(২) প্রমাণিত অসদাচারণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোন বিচারককে অপসারিত করা যাইবে না।
৯৬(৩) এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোন বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন।
৯৬(৪) কোন বিচারক রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদত্যাগ করিতে পারিবেন।
--------------------------------------------------------------
হাই কোর্টের রায়
“বলতে দ্বিধা নেই, ষোড়শ সংশোধনী একটি কালারেবল লেজিসলেশন, যা রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নীতির লঙ্ঘন।
“এটা সংবিধানের দুটি মূল কাঠামো ৯৪(৪)ও ১৪৭(২) অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন। একইসঙ্গে সংবিধানের ৭(বি) অনুচ্ছেদকেও আঘাত করে।
“সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে রুল যথাযথ (অ্যবসলিউট) ঘোষণা করা হল। ষোড়শ সংশোধনী আইন ২০১৪ কালারেবল, এটি বাতিল এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হল।”
---------------------------------------------------------------
এখন আসি আদালত যেসকল ধারা লংঘনের কথা বলছে তাদের প্রসঙ্গে।
---------------------------------------------------------------
সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদঃ
রাষ্ট্রের নির্বাহী অংগসমুহ হইতে বিচারবিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন।
উল্লেখ্য, এখানে আইনসভা থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণের কথা।
৯৪(৪) অনুচ্ছেদঃ
এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক বিচারকার্যপালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।
১৪৭(২) অনুচ্ছেদঃ
এই অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হয়, এই রূপ পদে অধিষ্ঠিত বা কর্মরত ব্যক্তির কার্যভারকালে তাঁহার পারিশ্রমিক, বিশেষ অধিকার ও কর্মের অন্যান্য শর্তের এমন তারতম্য করা যাইবে না, যাহা তাহার পক্ষে অসুবিধাজনক হইতে পারে।
-------------------------------------------------------------
আমার বোধগম্য নয় ষোড়শ সংশোধনী কিভাবে উপরের তিন অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। বরং যকোন গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সংসদই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা সরকারের অংশ যেকোন অপরাধী/অসদাচরণকারী/অসামর্থ্যবান ব্যক্তিকে অপসারণ করার ক্ষমতা রাখে। আর এই ক্ষমতার উৎস জনগণ।
সংসদের কর্তৃত্বের বাইরে কোন প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে না। ব্যতিক্রম আমাদের বিচার বিভাগ। জনগণের কর্তৃত্ব যদি তারা স্বীকার করতে না চান, তাহলে তাদের কর্তা কে?
আশা করি জেনে কথা বললে সব পক্ষের মধ্যে চলমান বিরোধ কিছুটা কমবে।
------------------------------------------------------------
ষোড়শ সংশধনী (সংবিধানের ৯৬ অনুচ্ছেদ)
৯৬(২) প্রমাণিত অসদাচারণ বা অসামর্থ্যের কারণে সংসদের মোট সদস্য-সংখ্যার অন্যূন দুই-তৃতীয়াংশ গরিষ্ঠতার দ্বারা সমর্থিত সংসদের প্রস্তাবক্রমে প্রদত্ত রাষ্ট্রপতির আদেশ ব্যতীত কোন বিচারককে অপসারিত করা যাইবে না।
৯৬(৩) এই অনুচ্ছেদের (২) দফার অধীন প্রস্তাব সম্পর্কিত পদ্ধতি এবং কোন বিচারকের অসদাচরণ বা অসামর্থ্য সম্পর্কে তদন্ত ও প্রমাণের পদ্ধতি সংসদ আইনের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করিতে পারিবেন।
৯৬(৪) কোন বিচারক রাষ্ট্রপতিকে উদ্দেশ্য করিয়া স্বাক্ষরযুক্ত পত্রযোগে স্বীয় পদত্যাগ করিতে পারিবেন।
--------------------------------------------------------------
হাই কোর্টের রায়
“বলতে দ্বিধা নেই, ষোড়শ সংশোধনী একটি কালারেবল লেজিসলেশন, যা রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগ, আইন সভা থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ নীতির লঙ্ঘন।
“এটা সংবিধানের দুটি মূল কাঠামো ৯৪(৪)ও ১৪৭(২) অনুচ্ছেদেরও লঙ্ঘন। একইসঙ্গে সংবিধানের ৭(বি) অনুচ্ছেদকেও আঘাত করে।
“সংখ্যাগরিষ্ঠ মতে রুল যথাযথ (অ্যবসলিউট) ঘোষণা করা হল। ষোড়শ সংশোধনী আইন ২০১৪ কালারেবল, এটি বাতিল এবং সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হল।”
---------------------------------------------------------------
এখন আসি আদালত যেসকল ধারা লংঘনের কথা বলছে তাদের প্রসঙ্গে।
---------------------------------------------------------------
সংবিধানের ২২ অনুচ্ছেদঃ
রাষ্ট্রের নির্বাহী অংগসমুহ হইতে বিচারবিভাগের পৃথকীকরণ রাষ্ট্র নিশ্চিত করিবেন।
উল্লেখ্য, এখানে আইনসভা থেকে বিচার বিভাগের পৃথকীকরণ কথা বলা হয়নি। বলা হয়েছে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথকীকরণের কথা।
৯৪(৪) অনুচ্ছেদঃ
এই সংবিধানের বিধানাবলী সাপেক্ষে প্রধান বিচারপতি এবং অন্যান্য বিচারক বিচারকার্যপালনের ক্ষেত্রে স্বাধীন থাকিবেন।
১৪৭(২) অনুচ্ছেদঃ
এই অনুচ্ছেদ প্রযোজ্য হয়, এই রূপ পদে অধিষ্ঠিত বা কর্মরত ব্যক্তির কার্যভারকালে তাঁহার পারিশ্রমিক, বিশেষ অধিকার ও কর্মের অন্যান্য শর্তের এমন তারতম্য করা যাইবে না, যাহা তাহার পক্ষে অসুবিধাজনক হইতে পারে।
-------------------------------------------------------------
আমার বোধগম্য নয় ষোড়শ সংশোধনী কিভাবে উপরের তিন অনুচ্ছেদের সাথে সাংঘর্ষিক। বরং যকোন গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থায় সংসদই একমাত্র প্রতিষ্ঠান যারা সরকারের অংশ যেকোন অপরাধী/অসদাচরণকারী/অসামর্থ্যবান ব্যক্তিকে অপসারণ করার ক্ষমতা রাখে। আর এই ক্ষমতার উৎস জনগণ।
সংসদের কর্তৃত্বের বাইরে কোন প্রতিষ্ঠান থাকতে পারে না। ব্যতিক্রম আমাদের বিচার বিভাগ। জনগণের কর্তৃত্ব যদি তারা স্বীকার করতে না চান, তাহলে তাদের কর্তা কে?