কম বয়সে পাশ আর চাকুরীর বয়সের সীমা উঠানো

একটা সময় ছিল যখন, যাই শুনতাম মনে থাকত। ক্লাস নাইন টেনের কথা মনে পরে। ক্লাসে শিক্ষক যাই বলত আমি না চাইলেও সেটা ভুলে যেতাম না।

এখন বয়স বেড়েছে। স্মৃতিশক্তি আর আগের মত নেই। সবকিছু মনে থাকে না। লিখে রাখতে হয় মনে রাখার জন্য।

স্কুল কলেজে স্মৃতি যেমন শক্তিশালী ছিল, তেমনি চিন্তার গতিও ছিল বেশি। যেকোন সমস্যা খুব দ্রুত সমাধান করে ফেলতাম। ধাঁধাও সলভ করতাম খুব দ্রুত। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রথম এক দুই বছরও তাই ছিল। কিন্তু আমি নিজেই বুঝি এখন চিন্তা ভাবনার গতি কিছুটা ধীর হয়ে গেছে।

স্মৃতি এবং চিন্তা কম বয়সে অনেক বেশি পরিষ্কার থাকে। বয়স যত বাড়ে ততই আজেবাজে জিনিসে আচ্ছন্ন হয় আমাদের চিন্তাগুলো।

এইজন্য উন্নত দেশগুলো তাদের শিক্ষাব্যবস্থা এমন ভাবে গড়ে তুলেছে যেন বিশ একুশ বছরেই গ্রাজুয়েশন হয়ে যায়। আমাদের দেশেও এটা ফলো করার চেষ্টা করা উচিৎ।

এসএসসি এইচএসসি আর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার জন্য একটা বছর এক্সট্রা খরচ না হলে আর বিশেষ ক্ষেত্রে ডবল প্রোমোশনের ব্যবস্থা থাকলে সতেরোর মধ্যে এইচএসসি শেষ করা সম্ভব।

সেক্ষেত্রে বিশ একুশের মধ্যেই গ্রাজুয়েট হতে পারবে অনেকে।

আগে আগে পাশ করা গ্রাজুয়েটরা জীবনের পরের পাঁচ বছরে বড় বড় আবিষ্কার করবে। অনেক কিছু উদ্ভাবন করবে। বিখ্যাত সব আবিস্কারকদের দিকে তাকালে দেখা যায় তারা জীবনের সবচেয়ে বড় অবিস্কারটি করেছেন পঁচিশ বছর বয়সের মধ্যে। বাকি জীবন সেই আবিষ্কারকে পাকাপোক্ত করতে কাজ করে গেছেন।

কম বয়সে পাশ করার ব্যবস্থা করার সাথে সাথে চাকুরীর ক্ষেত্রে বয়সের সীমা উঠিয়ে দিতে হবে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে স্মৃতি কমলেও বিচার-বুদ্ধি বাড়ে। চাকুরীর ক্ষেত্রে বিচার বিবেচনার প্রয়োজন বেশি। অবশ্য, যেসব পেশায় দ্রুত চিন্তার প্রয়োজন সেখানে কম বয়সে নিয়োগ দেয়া ঠিক আছে। যেমন- প্রতিরক্ষা বাহিনী।

যে যোগ্য, তার চাকুরী হবে। এখানে বয়সের কোন ভূমিকা আছে বলে আমি মনে করি না।

কম বয়সে পাশ আর চাকুরীর বয়সের সীমা উঠানো এই দুই ব্যবস্থা নিতে পারলে আমাদের সমাজের সার্বিক উন্নতি হবে বলে আমি মনে করি।

লেখাটি শেয়ার করুন

Share on FacebookTweet on TwitterPlus on Google+