সেদিনের অনেকবড় একটা খবর ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। নিউজের ফাঁকে ফাঁকে ডেমোক্রেটিক পার্টির কনভেনসনে লাইভে যাওয়া হচ্ছিল মাঝে মাঝেই। এইরকম একটা লাইভ নিউজের রিপোর্টার বলছিল, এইদিনে আমেরিকায় নতুন ইতিহাস হতে যাচ্ছে। কারণ হিলারী ক্লিনটন প্রথম নারী প্রার্থী হিসেবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিবেন। যদিও পৃথিবীর অন্যান্য দেশে ইতোমধ্যেই নারীরা দেশের প্রধান হয়েছেন কিন্তু আমেরিকায় তা এখনো হয়নি। যেসকল দেশের প্রধান নারী, তার উদাহরণ হিসেবে রিপোর্টার বলল, বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যে এখন নারীপ্রধান রয়েছে। খবরটা শুনে ভালই লাগল। একটি পজিটিভ বিষয়ে নিজের দেশের নাম শুনতে ভালই লাগে।
একইদিনে বিবিসি ওয়ানের একটা ডকুমেন্টারি দেখছিলাম। রায়ান কক্স নামে এক
অধ্যাপকের বিজ্ঞান নিয়ে তৈরি ডকুমেন্টারিটির একটি পর্বে দেখানো হচ্ছিল আমরা
যে আমাদের চারপাশটাকে এত রঙ্গিন দেখি সেটা কেন। চোখের গঠনে কি এমন আছে যার
কারণে আমরা পৃথিবীর সৌন্দর্য দেখতে পারি। একটি ছেলের কেস স্টোরি দেখিয়ে
বিষয়টা বুঝানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। তো সেই কেস স্টোরিটি শুরু হতেই দেখলাম
জায়গাটা চেনা চেনা লাগে। খানিকক্ষণবাদেই বুঝলাম এটা বাংলাদেশ। সেখানে সালমা
নামে গ্রামের সাধারণ একজন মহিলা তার ছেলের গল্প বলা শুরু করলেন বাংলা
ভাষায়। আর সাবটেইলে সেটার অনুবাদ দেখানো হচ্ছিল।
বিদেশি চ্যানেল দেখতে বসে দেশ আর দেশের ভাষা দেখার অনুভূতি আসলেই দারুণ।
ঘটনা দু'টোর কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। তবে মনে পড়ল আজকে ফেসবুকে একটা বিদেশি চ্যানেলের রিপোর্ট দেখে। এটাও বিবিসির একটা চ্যানেল, বিবিসি হিন্দি। রিপোর্টে বাংলাদেশের একটা ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থীকে কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলা বিষয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছিল। হিন্দিতে। আর ছাত্র-ছাত্রীরাও শুদ্ধ হিন্দিতে গড়গড় করে তার উত্তর দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের হিন্দি ভাষার দক্ষতা দেখে ততোটাই অবাক হলাম যা উপরের দু'টি ঘটনার কোনটা শুনেই হইনি। কারণ এতো সুন্দর শুদ্ধ বাংলাও আজকাল লোকে বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীরা বলতে পারেনা। বলতে পারলেও বলেনা।
কিছুই বলার নাই।
এটা ঠিক যে বাংলার সাথে হিন্দি ভাষার অনেক মিল, যেমন- ব্যাকরণ, শব্দ সবকিছুই খুব কাছাকাছি। তাই একটু শুনলে হিন্দি বোঝা বা বলা খুবই স্বাভাবিক। তবে করত্যা হ্যায়, খাইত্যা হ্যায় টাইপের হিন্দি আর ওরা যে হিন্দি বলল তার অনেক ফারাক। এক মেয়ে তো কি বলতে বলতে বলল, জাহির সি বাত ইয়ে হ্যায়। আর একজন বলল, রাহা করতা হ্যায়। এগুলো আমিও বুঝি। কিন্তু এত ফ্লুয়েন্টি এত জটিল বাংলা কথাও তো কেউ বলেনা, এটাই দুঃখ।
তাছাড়া ভাষার উদ্দেশ্য শুধু মনের ভাব প্রকাশ করা না। নিজের পরিচয় প্রকাশের একটা মাধ্যমও ভাষা। এই যেমন কোন বন্ধু যদি আঞ্চলিক ভাষায় না বলে শুদ্ধ ভাষায় আমাদের সাথে কথা শুরু করে আমরা কিন্তু মন খারাপ করি। ভাবি ওর ভাব বেড়ে গেছে। তেমনি ভারতীয় চ্যানেলে এইভাবে গড়গড় করে বাংলায় কথা বলার ফলাফল হবে, ভারত এরপর ফলাও করা শুরু করবে যে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ হিন্দি বোঝে এবং হিন্দিতে কথা বলতে পারে। যেটা আসলে সত্য না। বরং বাংলাদেশের গুটিকয়েক মানুষই তা পারে। হয়ত সেটা ১০% হবে।
ইংল্যান্ডে একজন ভারতীয় একদিন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল তুমি হিন্দি পার কিনা, তোমাদের ওখানে তো সবাই হিন্দি পারে। আমি বললাম, ব্যপারটা তেমন না। তবে হিন্দি ছবি দেখে দেখে অনেকে হয়ত কিছুটা শিখে। বাংলার সাথে মিল থাকায় আমিও অনেকটাই বুঝি। শুধু জটিল শব্দগুলো ছাড়া যেগুলো বাংলায় নেই। এইরকরম রিপোর্টের পর বুঝতে বাকি থাকে না ভারতীয়দের এই ধারণার উৎস কি।
বিদেশি চ্যানেল দেখতে বসে দেশ আর দেশের ভাষা দেখার অনুভূতি আসলেই দারুণ।
ঘটনা দু'টোর কথা প্রায় ভুলেই গিয়েছিলাম। তবে মনে পড়ল আজকে ফেসবুকে একটা বিদেশি চ্যানেলের রিপোর্ট দেখে। এটাও বিবিসির একটা চ্যানেল, বিবিসি হিন্দি। রিপোর্টে বাংলাদেশের একটা ইউনিভার্সিটির কিছু শিক্ষার্থীকে কিছুদিন আগে ঘটে যাওয়া জঙ্গি হামলা বিষয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছিল। হিন্দিতে। আর ছাত্র-ছাত্রীরাও শুদ্ধ হিন্দিতে গড়গড় করে তার উত্তর দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের হিন্দি ভাষার দক্ষতা দেখে ততোটাই অবাক হলাম যা উপরের দু'টি ঘটনার কোনটা শুনেই হইনি। কারণ এতো সুন্দর শুদ্ধ বাংলাও আজকাল লোকে বিশেষ করে ছাত্র-ছাত্রীরা বলতে পারেনা। বলতে পারলেও বলেনা।
কিছুই বলার নাই।
এটা ঠিক যে বাংলার সাথে হিন্দি ভাষার অনেক মিল, যেমন- ব্যাকরণ, শব্দ সবকিছুই খুব কাছাকাছি। তাই একটু শুনলে হিন্দি বোঝা বা বলা খুবই স্বাভাবিক। তবে করত্যা হ্যায়, খাইত্যা হ্যায় টাইপের হিন্দি আর ওরা যে হিন্দি বলল তার অনেক ফারাক। এক মেয়ে তো কি বলতে বলতে বলল, জাহির সি বাত ইয়ে হ্যায়। আর একজন বলল, রাহা করতা হ্যায়। এগুলো আমিও বুঝি। কিন্তু এত ফ্লুয়েন্টি এত জটিল বাংলা কথাও তো কেউ বলেনা, এটাই দুঃখ।
তাছাড়া ভাষার উদ্দেশ্য শুধু মনের ভাব প্রকাশ করা না। নিজের পরিচয় প্রকাশের একটা মাধ্যমও ভাষা। এই যেমন কোন বন্ধু যদি আঞ্চলিক ভাষায় না বলে শুদ্ধ ভাষায় আমাদের সাথে কথা শুরু করে আমরা কিন্তু মন খারাপ করি। ভাবি ওর ভাব বেড়ে গেছে। তেমনি ভারতীয় চ্যানেলে এইভাবে গড়গড় করে বাংলায় কথা বলার ফলাফল হবে, ভারত এরপর ফলাও করা শুরু করবে যে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ হিন্দি বোঝে এবং হিন্দিতে কথা বলতে পারে। যেটা আসলে সত্য না। বরং বাংলাদেশের গুটিকয়েক মানুষই তা পারে। হয়ত সেটা ১০% হবে।
ইংল্যান্ডে একজন ভারতীয় একদিন আমাকে জিজ্ঞাসা করেছিল তুমি হিন্দি পার কিনা, তোমাদের ওখানে তো সবাই হিন্দি পারে। আমি বললাম, ব্যপারটা তেমন না। তবে হিন্দি ছবি দেখে দেখে অনেকে হয়ত কিছুটা শিখে। বাংলার সাথে মিল থাকায় আমিও অনেকটাই বুঝি। শুধু জটিল শব্দগুলো ছাড়া যেগুলো বাংলায় নেই। এইরকরম রিপোর্টের পর বুঝতে বাকি থাকে না ভারতীয়দের এই ধারণার উৎস কি।