ঘটনাবহুল মাস

গত একমাসে এত কিছু হয়ে গেছে যে ৩০ দিন আগে পৃথিবী যেমন ছিল এখন তার থেকে অনেক আলাদা।


ব্রিটেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন থেকে বের হয়ে যাওয়ার জন্য ভোট দিয়েছে। পুরো ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের ইতিহাসে এটা অনেক বড় ধাক্কা। এর কারণে পাউন্ডের দাম কমে গেছে, ব্রিটেনের শেয়ার বাজারের অনেক পতন হয়েছে। আর ডেভিড ক্যামেরন মনে করেছেন ভোটের এই ফলাফলের পর তার প্রধানমন্ত্রী থাকা শোভা পায় না। তাই তিনি সরে গিয়েছেন। এখন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে।

কোপা আমেরিকা ফুটবলের ফাইনালে পেনাল্টি মিস করেছে মেসি। এতে আর্জেন্টিনার হয়ে কোন কাপ জেতার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে গেল তার। আর এদিকে প্রথমবারের মত ইউরো ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়ে ইতিহাস তৈরি করে ফেলল পর্তুগাল। মেসি নিজের দলকে কোন শিরোপা দিতে না পারলেও ক্রিশ্চিয়ানো রোনালডো পর্তুগালকে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অর্জন এনে দিল।

বাংলাদেশের গুলশানে একটি ক্যাফেতে হামলা চালিয়ে জঙ্গিরা অনেক বিদেশিসহ, পুলিশ ও সাধারণ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করল। কয়েকদিন পরে ঈদের জামাতে আবার একটি হামলা হল। এছাড়াও বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী ধর্মগুরু এবং ব্লগার হত্যাও চলছে সমানতালে।

তুরস্কে স্বেচ্ছাচারী সরকারকে সরানোর জন্য আর্মির ক্যু এর চেষ্টা ব্যর্থ হয়ে গেল। আর ক্যু এর পর প্রেসিডেন্ট এরদোগান এখন বলছেন তিনি হিটলারের মত ক্ষমতা চান। ক্যু অবশ্যই সমর্থনযোগ্য না। কিন্তু গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় গণতান্ত্রের মৃত্যু হলে তা আরও দুঃখজনক। এখন শুধু স্টার ওয়ারস মুভির কথা মনে হচ্ছে। গত কয়েকদিনে মুভিটি আবার দেখেছি। মুভিতে সিনেটের সবাই ভোট দিয়ে চ্যান্সেলর পালপাটিনের হাতে জরুরী ক্ষমতা তুলে দেয়। এরপর শুরু হয় পালপাটিনের আগ্রাসন। হিটলারের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছিল। এরদোগানও সেরকম চাচ্ছেন কিনা সেটাই প্রশ্ন।

কিছুদিন আগে প্যারিসে অনেক লোকের জমায়েতের উপর একটা ট্রাক চালিয়ে দেওয়ার পর গতকাল মিউনিখে সাধারণ মানুষের উপর বন্ধুক নিয়ে হাওলা চালালো জঙ্গিরা। এরমধ্যেই দশজনের মত মানুষের মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে মিউনিখ থেকে।

এছাড়াও হয়েছে আর তুরস্কে বোম্বিং, আমেরিকায় শুটিংসহ মধ্যপ্রাচ্যে হয়েছে আরও ছোট বড় অনেক মানুষ হত্যার ঘটনা।

শান্তিতে থাকা বোধহয় মানুষের সহ্য হয়না। তাই কোন না কোন অজুহাতে অথবা ক্ষমতার লোভে অশান্তি চলতেই থাকবে। হতাশ না হয়ে এর মধ্যেই জীবনে এগিয়ে যেতে হবে। আর কোন পথ নেই।
পরিবর্তন স্বাভাবিক। পরিবর্তন না হওয়াটাই অস্বাভাবিক। তবে গত একমাসে বিশ্বে পরিবর্তন একটু বেশিই হয়ে গেছে।

[বি দ্রঃ এর মধ্যে আমার জন্মদিনের মত ঐতিহাসিক একটা ঘটনাও ঘটে গেছে। লিখার সময় ব্যাপারটি ভুলে গিয়েছিলাম। এখন এডিট করে এখানে বসিয়ে দিচ্ছি। প্রত্যেকের জন্মদিন তার নিজের কাছে অন্তত ঐতিহাসিক তাৎপর্য নিয়ে হাজির হয়।]

লেখাটি শেয়ার করুন

Share on FacebookTweet on TwitterPlus on Google+