অন্য চাকরির পাশাপাশি বিসিএসের প্রস্তুতি নেয়া উচিৎ

বিসিএস নিয়ে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডট কমকে দেয়া সাক্ষাৎকার (২য় অংশ)
ক্যারিয়ার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

বাংলানিউজ: ভাইভা বোর্ডের অভিজ্ঞতা জানতে চাই?
মঞ্জিলুর রহমান: ভাইভা বোর্ডে আমাকে মূলত তিন ধরণের প্রশ্ন করা হয়েছিল। নিজের সমন্ধে, চাকরি সমন্ধে এবং বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ সমন্ধে। নিজের সমন্ধে প্রশ্নে আমি কে, দেশের বাড়ি কোথায়, কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েছি, কোন বিষয়ে পড়েছি এবং কেন বিসিএসের চাকুরী করতে চাই তা জিজ্ঞাসা করা হয়েছে। চাকরি সমন্ধে প্রশ্নে বাংলাদেশের সিভিল সার্ভিসের সাথে আমি বিদেশে যে দেশে থাকি সেই দেশের সিভিল সার্ভিসের তুলনা করতে বলা হয়েছে। এর সাথে সাথে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়েছে যা আমি স্মরণ করতে পারছি না। বাংলাদেশ ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রশ্নে দেশের দুই একটি প্রশ্ন করে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কিছু কথা বলতে বলা হয়েছে।


আসলে, ভাইভাটা ছিল একধরণের আলাপচারিতা যার মাধ্যমে ভাইভা বোর্ড আমার সমন্ধে জানতে চাচ্ছিলেন। যেকোন ভাইভারই উদ্দেশ্য হল, প্রার্থী ঐ চাকরির জন্য কতটা ফিট সেটা নির্ধারণ করা। সেদিক থেকে পোশাক-আশাক, কথাবার্তার ধরণ ও চাল-চলন অনেক সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

বাংলানিউজ : সব পেরিয়ে সফল হওয়ার পর অনুভূতি কেমন?
মঞ্জিলুর রহমান: এখন তো আমার ক্যারিয়ারের কেবল শুরু। মানুষের জন্য কিছুই করতে পারিনি এখনও। ভবিষ্যতে আমার কাজে যদি মানষের জীবন একটু হলেও সুন্দর হয় তাহলেই নিজেকে সফল মনে হবে।

তবে আমার সবচেয়ে ভাল লাগে আমি ভাল কিছু করলেই আমার পরিবার, বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও শিক্ষকদের খুশি দেখতে। আমার যেকোন অর্জনেই তারা অনেক খুশি হয়। বিশেষ করে আমার বাবা-মা। জীবনে এপর্যন্ত যতটি পরীক্ষায় আমি ভাল করেছি বা যখনই ভাল কিছু অর্জন করেছি তখনই তারা খুশিতে ফেটে পরে। আমি মাঝে মাঝে অবাক হই, ছোট কিংবা বড় আমার যেকোন সাফল্যের খবরে তারা কতখানি আনন্দিত হয়।

বাংলানিউজ : মেধাতালিকায় যখন প্রশাসন ক্যাডারের দ্বিতীয় স্থানে নিজের নাম দেখলেন- তখনকার অনুভূতি কি? 
মঞ্জিলুর রহমান: আমি জানিনা এটা বললে বেশি অহংকারী শোনাবে কিনা তবে লিখিত পরীক্ষা ও ভাইভা দেওয়ার পর যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে ভাল ক্যাডারই হয়ত পাব। কিন্তু মেধাতালিকার বিষয়ে নিঃসন্দেহ ছিলাম না। রেজাল্টে যখন দেখলাম প্রশাসন ক্যাডারে দ্বিতীয় তখন বুঝলাম যে সবকিছু পরিকল্পনামতই হয়েছে।

বাংলানিউজ : ভবিষ্যতে যারা বিসিএস ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তাদের প্রতি আপনার পরামর্শ?
মঞ্জিলুর রহমান: ভবিষ্যতে যারা ক্যাডার হতে চায় তাদের খুব বেশি পরামর্শ দেওয়ার যোগ্যতা আমার আছে বলে মনে করিনা। তবে এতটুকু বলতে পারি যেকোন কিছুর জন্য লেগে থাকলে সেটা করা সম্ভব।

তবে বাস্তবতা সমন্ধেও ধারণা থাকতে হবে। নিজের যোগ্যতা নিজের জানা থাকতে হবে এবং সেই যোগ্যতা দিয়ে কি করা সম্ভব সেটা নিজেকেই ঠিক করতে হবে। অনেকে পাশ করার পর বিসিএস চাকরির আশায় অনেকে বসে থাকে। আমার মতে এটা ঠিক নয়। পাশ করার পর যেকোন কাজে ঢুকে পরা উচিৎ সাথে সাথে বিসিএসের প্রস্তুতি চালিয়ে যাওয়া উচিৎ।

বিসিএস পরীক্ষা দেয় লক্ষাধিক ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের মধ্যে হাতে গোনা এক দুই হাজার জনের চাকরি হয়। তার মানে যারা পরীক্ষা দিচ্ছেন তাদের বড় অংশই কিন্তু চাকরি পাবেননা। এই বিষয়টিও মাথায় রাখা উচিৎ। বিকল্প ক্যারিয়ার পরিকল্পনা থাকা উচিৎ।

মঞ্জিলুর রহমান
৩৫ তম বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার (মেধাক্রম ২য়)

লেখাটি শেয়ার করুন

Share on FacebookTweet on TwitterPlus on Google+